বর্ষামাধুরী
মিত্রাণী
অবশেষে অলকপুরী থেকে ভেসে এসেছে বিরহডাক। আষাঢ়ে হাওয়ার দিগন্তপ্রসারী উত্তরীয় ছুঁয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে এক ধূসর মায়া, প্রবাসী প্রেমিকের সাবলীলতায় ! অরণ্যচারী মেয়ের কপালের কাঁচপোকা টিপের মত ঝিকিয়ে ওঠে সাঁঝতারা, মেঘবালারা হাত ধরাধরি করে ঘন হয়ে আসে আমাদের মফস্বলে, জানলার চৌকো ফ্রেমে আটকানো আকাশ জুড়ে! কোথা থেকে যেন ভেসে আসে এক মনউদাসী সুর।বলে যায়, কি যেন ভুলে গেছি, কাকে যেন ভুলে গেছি। সে কি কোন প্রিয়নাম নাকি কোন এক প্রিয়মুখ। জন্মান্তরের বিস্মরণ গল্পের মত ছুঁয়ে যায় আমার অশান্ত মন। আমি একা একা স্বপ্নের নকশা বুনি, যেমন করে উর্ণনাভ বুনে চলে লূতাতন্তুজাল।যার প্রতি দৃশ্যকল্প ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় এক অনামা মেয়ের নদীপুরাণকাব্য! এসব ভাবতে ভাবতেই আমি টের পাই তার শাঁখা-পলার মৃদু শীৎকার, সিঁদুরে লাল লজ্জা,আলতাছোপধরা আদরের আতিশয্য। কে জানতো, বর্ষাতেও এত আনন্দ, এমন অমেয় সুখ। ঘরের চৌকাঠে উপচে আসে বৃষ্টিদানা, বাতাসে ঘন হয় মেঘমল্লার, আলোছায়া বিভ্রমে কায়াময় হয়ে আসে সে বিদ্যুৎলতা কন্যার অলীক অস্তিত্ব। আমি তো নিশ্চিত জানি যে বর্ষা মাধুরী ছড়ায়, যে বর্ষায় রুখামাটিরও গর্ভসঞ্চার হয়, সে বর্ষা কাউকে একাকি থাকতে দেয়না।
এতো লেখা নয় আকাশ মাটি ও মন ছুয়ে চলা অনন্ত কালের আলিম্পন।
ReplyDelete