মৌনী নদী
তপন সাহা
সেঁজুতি দ্বীপটিকে
মাঝবরাবর চিরে দিয়ে বইছিলো মৌনী নদীটি। ভাসছিলো তাতেই নাম গোত্রহীন এক টুকরো
খড়কুটো,যেমন ভাসে।তখন সে নদীর ঘাটে একলসেঁড়ে।
ভোরের আলো দরজায়
এসে ডাক দেয় নীলনয়নাকে।পথ মাড়ায় নয়না।মৌনীকে দু’হাতে আদর করে গায়ে মাথায় বুলিয়ে নিতে নিতেই ঝুপ করে ডুবটাও দিয়ে দেয়। মৌনীর নীল ছিল,নীলের ছিল লাল অহংকার।
ছপ্ ছপ্ শব্দের
সাথে নূপুরের নিক্কন ডাগরী ভরার শব্দকে ছাপিয়ে উঠলে,মড়মড়িয়ে ভেঙ্গে ওঠে তার বুক। ডাগর চোখের ভেজা শাড়ীর আঁচলে এঁটুলি হয়ে যায় সেও।
এখনো শেষ হয়নি
গল্পটা।
কলস কাঁখে নয়না পথ
হাঁটে, হাঁটতেই থাকে।
সকালের রোদে আগুন
রঙের কঙ্কাতিকা আঁচড়ে দেয় আঁচল। ঝরে পড়ে যায়।
খড়ের ছাউনীতে নয়,ভাঙা রাজপথে সে এখন মৃত্যুকালীন একা।
(২)
নীল নির্জনে
স্কোয়ার ফিটের
চৌখুপি দাবার ছক হয়ে উঠলে মনের দরজায় পড়শীর ‘প্রবেশ নিষেধ’।
বাড়ির পাঁচিলটা অজুহাত নয় আর, এখন ইঞ্চি পাঁচেক।
ভোমর-কালো এলোচুলে
ভেজা কাপড় উঠোনে আর শোনায় না –‘বঁধু কোন আলো .........’ কবেই খুইয়েছি সে সব....
এ বাড়ির একুশের
সাথে
ও বাড়ির উনিশের
কাজল রেখার চাউনি পড়ার টেবিলে রেডিওর গান হয়ে ওঠে না আর!
মনের জানালা
স্মৃতির ছায়াআলোয়
ছবি এলায় খানিক।
আস্তিনের পরতে
পরতে জমে থাকা মাদকতা সুর ভাঁজে “ ঘরের পাশেই আরশিনগর সেখানে এক পড়শি বসত করে.....”
(৩ )
যে জন ভালোবেসে
একদিন কেউ এসে
বলবে
তোমার অনেকদিন
নাওয়া হয়নি
আমি একটা নদী এনেছি
একদিন কেউ এসে
বলবে
অনেকদিন তোমার
কিছু খাওয়া হয়নি
আমি এক ধামা মুড়ী
এনেছি
একদিন কেউ এসে
বলবে
বেশ কিছুদিন হলো
ফুলদানীটা বেজায় খালি
আমি একগোছা গোলাপ
এনেছি
একদিন কেউ এসে
বলবে
সেই কতদিন শিরীষ
গাছটার তালাশ করিনি
চলো না আজ পাখী হয়ে
তার খোঁজ নিয়ে আসি
No comments:
Post a Comment