কাবেরী তালুকদারের কবিতা--
পরমায়ুর অপরাধ
এই তো জীবন কালীদা,,
বলে কি, ছেলেটা কি পেগলে গেল।
সম্পর্কে আমি ওর জেঠামশাই
হ ই।
না কি চলতী জীবনের এটাই কায়দা।
এগিয়ে চলি অবসরের
বোঝা নিয়ে কাঁধে, আজকাল এড়িয়ে চলি চেনা জানা সবাইকে।
চেনা অচেনা মুখ কত যে ডাকে,
দেই না সারা কেমন যেন, কোথায় যেন বাধে।
ঘরে বসে দেখছি টি ভি চা বিস্কুট হাতে,আড়াল থেকে শুনতে পেলাম
বৌমা বলেন ছেলেকে, তোমার বাবার মাথাটা একে বারেই গেছে, দেখো একটা বৃদ্ধাশ্রম মঙ্গল
হবে তাতে।
বৃদ্ধাশ্রম, সেটা কি নব্য জীবনের
বৃদ্ধদের রাখার খোয়ার,
শুনেই কেন হৃদকম্প,
বেশী বাচার অপরাধ।
বহুদিন পরে উঠলো ভেসে
মায়ের মুখটি সামনে এসে
হাসি মুখে পায়েস খাইয়ে
বলছে মা হেসে হেসে, ঠাকুর দীর্ঘায়ু কর ছেলেকে
আমার।
চোখের জলে ভেসে বলি
মাগো, কি অভিসাপ আমায় দিলি
বৃদ্ধ পিতা মাতার সঙ্গে থাকা
এ প্রজন্মের মস্তবড়ো অপরাধ।।
,,ফুলের আশা,,
বাগানের ঐ চাপাগাছে কত যে ফুল ফোটে।
দিনভোর আর গোটা রাত্তির
অবিশ্রান্ত ঝরে।
শুনেছি ফুলের একটাই চাওয়া
দেবতার পায়ে শুধু যেন পড়া
কটা ফুল তার পায় আশ্রয়
গাছ কি বোঝেনা তাহা।
গোটা রাত ধরে দেই যে পাহারা
চাই যে আমার ফুলের সাহারা
দেবো যে আমি মোর দেবতায়
শ্রীচরন ঐ খালি পরে রয়।
ভোর না হতেই মালিনীর দল
সাজি নিয়ে হাতে তুলে নেয় ফুল
কাকে যে সাজাবে, কাকে যে দেবে,
এই নিয়ে করে মহা কলোরোল।
ফুল কি কাঁদিতে পারে,
ফুটেছিল ওরা বুকে নিয়ে আশা
দেবতার পায়ে পড়িবে তাহারা
ব্যর্থ হল যে জীবনের চাওয়া
কবরীতে যে ঠাঁই হোল খাসা
বারাঙ্গনার মত যে তাহারা
দোলে যে দীর্ঘ বেনীর সাথে।
আহা, ফুল কি কাঁদিতে পারে।।
No comments:
Post a Comment